পাভেল ইসলাম মিমুল স্টাফ রিপোর্টার
রাজশাহীতে তরুণ সাংবাদিকদের নিয়ে "প্রচলিত গণমাধ্যম বনাম সংবাদ মাধ্যম নতুন সুযোগ" শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ মে) নগরীর অভিজাত এক রেস্তোরাঁয় জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির আয়োজনে দিনব্যাপী এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
'ট্র্যাডিশনাল মিডিয়া ভার্সেস নিউ মিডিয়া- নিউ চ্যালেঞ্জ' বিষয়বস্তুর ওপর অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সভাপতি নুরে ইসলাম মিলন।
এতে প্রধান আলোচক ও প্রশিক্ষক ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক মিস্টার আনোয়ার হক।
এতে আলোচক ও প্রশিক্ষক ছিলেন এটিএন বাংলার রাজশাহীর স্টাফ রিপোর্টার সুজাউদ্দীন ছোটন। ফটোগ্রাফি নিয়ে আলোচনা করেন সিনিয়র ফটোসাংবাদিক ফরিদ আক্তার পরাগ,দৈনিক রাজশাহীর আলোর সম্পাদক মো. আজিবার রহমান,এসটিভির রাজশাহী প্রতিনিধি সৈয়দ মাসুদ,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সম্পাদক এম এ হাবিব জুয়েল, বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর উপস্থাপক মোছা. রশ্মি, সাংবাদিক নজরুল ইসলাম জুলুসহ সিনিয়র সাংবাদিকরা বক্তব্য রাখেন।
এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় কর্মরত পত্রিকা,টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইন গণমাধ্যমে কর্মরত শতাধিক সাংবাদিক অংশ নেন।
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সভাপতি নুরে ইসলাম মিলনের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কর্মশালা শুরু হয়।
এরপর এটিএন বাংলার রাজশাহীর স্টাফ রিপোর্টার সুজাউদ্দীন ছোটন বলেন,সাংবাদিকতা মহান পেশা। সাংবাদিকদের অনেককিছু শিখতে হয়, জানতে হয়। এ পেশায় এসে একটা ভুল করেন অনেকে; সরকারী কর্মকর্তাদের 'স্যার' ডাকেন। সরকারী কর্মকর্তাদের অবশ্যই 'স্যার' ডাকা যাবে না। 'স্যার' বলার পেশা নয় সাংবাদিকতা। তারা জনগণের চাকর,তাদের 'স্যার' বলার কোনো যুক্তিই নেই।
তিনি বলেন,শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী,রাষ্ট্রপতি ও শিক্ষককে 'স্যার' বলা যাবে। সাংবাদিকরা কখনো স্যার বলতে ও শুনতে অভ্যস্ত নয়। এসময় সংবাদে কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদদের পদবী ব্যবহারের ধারাক্রম জানার ব্যাপারেও গুরুত্বারোপ করেন সাংবাদিক সুজাউদ্দীন ছোটন।
ফটোগ্রাফি নিয়ে দৈনিক ইনকিলাবের ফটোসাংবাদিক ফরিদ আক্তার বলেন,গণমাধ্যমে সব ছবি বা দৃশ্য প্রকাশযোগ্য নয়। দুর্ঘটনার বীভৎস ছবি প্রকাশ করা বেআইনি। ছবি তোলার ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে। পথচারীদের অসুবিধা সৃষ্টি করে ছবি তোলা যাবে না। ছবি তোলার সময় অন্য সহকর্মীদের প্রাধান্য দিতে হবে। অন্যের অসুবিধা করে ছবি তোলা থেকে বিরত থাকা উচিত।
রাজশাহী পদ্মা প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা ও নিউজ পোর্টাল উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের প্রধান সম্পাদক এম.এ.হাবীব জুয়েল বলেন -ফেসবুক রয়টার্সের সাথে সংযুক্ত হয়ে ফেসবুক জার্নালিজম প্রজেক্ট (FJP) কোর্স চালু করেছে যা সকল সাংবাদিকের জন্য ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে। এক্ষেত্রে সকল সাংবাদিককে (FJP) প্রজেক্টে সাইনআপ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করে পরীক্ষা দিতে হবে।
এ সময় প্রশিক্ষকরা বলেন,সাংবাদিকদের ব্যক্তিত্ববান হতে হবে। সাংবাদিক মানে আমরা জানবো-তিনি স্মার্ট, ব্যক্তিত্ববান ও তুখোড়। বাংলা উচ্চারণে সাংবাদিকেদর দক্ষ হতে হবে। লেখার ধরণ,বাংলা ও ইংরেজি উচ্চারণ এবং পোশাক মার্জিত হতে হবে। কথাবার্তায় সংযত হতে হবে। তারা বলেন,আমরা সঠিক জায়গায় নেই। সঠিক জায়গায় আসুন।
প্রধান আলোচক ও প্রশিক্ষক সিনিয়র সাংবাদিক মিস্টার আনোয়ার হক বলেন,সাংবাদিকতার আজকের বিবর্তন বা মিডিয়ার এগিয়ে চলা ডিজিটালাইজেশনের সাথে। ডিজিটালাইজেশনের সাথে আমাদেরকে থাকতে হবে। পৃথিবী যেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে,আমাদেরও সেদিকে থাকতে হবে। নাহলে আমরা ছিটকে পড়তে বাধ্য হব,আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হবে।
সময় টিভি,আরটিভি,বিডি নিউজ২৪ডটকম,দৈনিক বাংলা,আজকের কাগজের সাবেক এ রিপোর্টার বলেন, বায়াস বা রং কোনো ইনফরমেশন আমরা দিতে পারব না। বিশ্বের কেউ আমাকে এই রাইটস দেয়নি। আমি আমার কথা বা আমার মতো করে কথা বলতে পারব না। অবশ্যই রেফারেন্স দিয়ে বলতে হবে।
প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে সাংবাদিকরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ ও আয়োজক সংগঠনটিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এদিকে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী বিভাগের উদ্যোগে প্রতিবছরে দুইবার করে এমন সাংবাদিকদের কর্মশালার আয়োজন করা হবে বলে প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষনা করেন সংগঠনের রাজশাহী বিভাগের সভাপতি মো: নুরে ইসলাম মিলন।