র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব জঙ্গি, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী, অস্ত্রধারী অপরাধী, ভেজাল পণ্য, ছিনতাইকারী, ধর্ষণকারী, খুনি, প্রতারক ও হ্যাকারদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আপনারা সকলে অবগত আছেন যে, গত ০৫/০৫/২৪ ইং তারিখে বাগমারা থানাধীন নরদাশ ইউপির জয়পুর মোড়ের উত্তরে জনৈক জসিম বিএসসির পুকুরের পাশের পাকা রাস্তার উপর ০৩ নং আসামী রাসেল এর মোটরসাইকেল নস্ট হয়ে যায়। বাদীর ভাতিজা জনৈক জহুরুল মেকারের দোকানের শিক্ষানবিশ মেকানিক ভিকটিম মোঃ রাজু (১৮) অন্যান্য দিনের ন্যায় গত ০৫/০৫/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত্রী অনুমান ০৭.৩০ ঘটিকার সময় দোকান বন্ধ করে বাড়ী ফেরার পথে রাত্রী অনুমান ০৮:০০ ঘটিকার সময় উক্ত স্থানে পৌছালে উপরোক্ত আসামীগণ বাদীর ভাতিজার পথরোধ করিয়া তাকে উক্ত মোটর সাইকেলটি মেরামত করার জন্য চাপ দেয়। সে মোটর সাইকেল ঠিক করতে অপারগতা প্রকাশ করে।
ভিকটিম মোঃ রাজু আসামীদের নির্দেশ মতো মোটর সাইকেল মেরামত করে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আসামীগণ বাদীর ভাতিজা রাজুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। ভিকটিম মোঃ রাজু তাদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে ০২নং আসামীমোঃ আঃ হাকিম এর হুকুমে তার ছেলে ০১নং আসামী মোঃ শরীফ তার হাতে থাকা লোহার হাতুড়ি দিয়ে রাজুকে এলোপাথারীভাবে আঘাত করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালশিরা ফোলা জখম করে। ঘটনাস্থল হতে অনুমান ১০০ ফিট দুরে চায়ের দোকানে বসে থাকা বাদীর পিতা গহের আলী (৬৩) ভিকটিম মোঃ রাজুর চিৎকারের শব্দ শুনে উক্ত স্থানে এগিয়ে আসলে ০২নং আসামী বাদীর পিতাকে ধরে রাখে এবং ০১নং আসামী তার হাতে থাকা লোহার হাতুড়ি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গহের আলীর মাথার পেছনে ঘাড়ে আঘাত করে। আঘাতের ফলে গহের আলী রাস্তার নিচে পরে যায় এবং সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
পরবর্তীতে থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ ঘনাস্থলে গিয়ে গহের আলীর (৬৩)মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত পূর্বক মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। উক্ত ঘটনায় রাজশাহী জেলার বাগমারা থানার মামলা নং-৭, তাং- ০৬/০৫/২০২৪ ইং, ধারা- ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩০৭/৩০২/১১৪/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
হত্যাকান্ড সংগঠনের পরপরই আসামীগণ বিভিন্ন পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে পলায়ন করে। উক্ত ঘটনায় বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যায় র্যাব ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৫, রাজশাহীর একটি চৌকস অপারেশন দলের গোয়েন্দা নজরদারী ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ১৩ মে ২০২৪ খ্রিঃ ১৬.১৫ ঘটিকায় রাজশাহী এর পুঠিয়া থানাধীন পুঠিয়া বাজার তাহেরপুর রোড মোড় এলাকায় অপারেশন পরিচালনা করে উক্ত মামলার এজাহার নামীয় ২ নং আসামী মোঃ আঃ হাকিমকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্য মতে উক্ত মামলার অন্যতম মূলহোতা এজাহার নামীয় ১ নং আসামী মোঃ শরিফ হোসেনকে ১৪ মে ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ ১৮.১০ ঘটিকায় ফরিদপুর জেলার সদর থানার শরীয়ত উল্লাহ বাজার এলাকা থেকে র্যাব-১০, ফরিদপুর ক্যাম্প এর সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ১ নং আসামী মোঃ শরিফ হোসেন উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।
উক্ত মামলার অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারের বিষয়ে র্যাব-৫ এর আভিযানিক দল তৎপর রয়েছে। গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।