আহসান হাবীব,শিবগঞ্জ(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে এক মাদ্রাসার শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে ওই শিক্ষক জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ভূক্তভোগী শিক্ষক হচ্ছেন শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের নামোটিকোরী আলিম মাদ্রাসার সিনিয়র প্রভাষক (ইংরেজি) মোঃ আলমগীর হোসাইন।
ভূক্তভোগী সিনিয়র প্রভাষক (ইংরেজি) মোঃ আলমগীর হোসাইন তাঁর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১২ সাল থেকে এই মাদ্রাসায় চাকরিরত। গত ৫ আগষ্ট অত্র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম মৃত্যুবরণ করলে উপাধ্যক্ষ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান। তিনি অসুস্থতার কারণে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত হয়ে আসছেন। কিন্তু প্রভাষক (ইতিহাস) সফিকুল ইসলাম দাবি করে যে, তিনিই প্রতিষ্ঠানের সকল কিছু দায়িত্ব তাঁকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
ভূক্তভোগী প্রভাষক আলমগীর হোসাইন আরো বলেন, সফিকুল ইসলাম একজন প্রভাষক হলেও প্রতিষ্ঠানের সকল আয়-ব্যয় তাঁর কাছে ন্যাস্ত, এমনকি তিনি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব তাঁর বলে দাবি করছেন।
সিনিয়র প্রভাষক (ইংরেজি) মোঃ আলমগীর হোসাইন অভিযোগ করে বলেন, পরিচ্ছন্নকর্মী হাসিবের মাধ্যমে অফিস সহকারি জিয়াউর রহমান আমাকে ডেকে পাঠান। তাঁর ডাকে সারা দিয়ে আমি অফিস সহকারি জিয়াউর রহমানের কক্ষে যাই। সেখানে উপস্থিত হলে প্রভাষক (বাংলা) মোঃ নিলাম হোসেন ও অফিস সহকারি জিয়াউর রহমান আমাকে ধরেন এবং প্রভাষক (ইতিহাস) সফিকুল ইসলাম মারধর করেন।
তিনি আরো বলেন, সফিকুল ইসলাম ও জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠানে একটি নতুন সমিতি খোলেন এবং শিক্ষকদের কাছে চাঁদা আদায় করেন। এরপূর্বে আরেকটি সমিতি খোলা হয়েছিল, সেখানে আমার ৫০ হাজার টাকা জমা দেয়া ছিল। এখন পযর্ন্ত সে টাকা আমাকে ফেরত দেয়নি তাঁরা।
কিন্তু আমি নতুন সমিতিকে চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় গত ২৩ অক্টোবর দুপুরে মারধর করেন তাঁরা। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলামকে অবহতি করি। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে চেয়েছিলেন।
এদিকে, প্রভাষক (ইতিহাস) সফিকুল ইসলাম জানান, আলমগীর হোসাইনকে মারধরের ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আর যদি অভিযোগ করে থাকেন তাহলে আমি এবিষয়ে অফিসিয়ালি জবাব দিবো।
অন্যদিকে, অফিস সহকারি জিয়াউর রহমান বলেন, আমি আলমগীর হোসাইন স্যারকে ডেকে ছিলাম এটা সত্য। অফিসের কাজের জন্য ডেকে ছিলাম। কিন্তু আমার অফিসে দুজন স্যার হট্টগোল শুরু করে। এক পর্যায়ে আমি তাঁদের অফিসের বাইরে চলে যেতে বলি। আর স্যারকে মারধর করেছে কি না তা আমার জানা নাই।
প্রভাষক (বাংলা) মোঃ নিলাম হোসেন জানান, আলমগীর কে মারধরের ঘটনা কখন ঘটেছে তা আমি জানি না। আর আমাকে কেনো অভিযুক্ত করছেন তাও জানি না। আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
এদিকে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম জানান, যেদিন ঘটনাটি ঘটেছে। সেইদিন আলমগীর হোসাইন আমাকে ফোন জানিয়েছেন। আমি তাঁকে লিখিত অভিযোগ দিতে বললে তিনি এখন পর্যন্ত আমাকে কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তাই আমিও কোন ব্যবস্থা নিতে পারিনি।
এব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজান মো. মুরশিদুল আলম জানান, এঘটনা আমাদের কেউ জানাননি। আপনার কাছে শুনলাম। যদি কেউ অভিযোগ দেন তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।