আহসান হাবীব,শিবগঞ্জ(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সাবেক সেনা সদস্য কর্তৃক তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ধর্ষনের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ১১ নভেম্বর শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের পীরগাছি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ওই দিন ধর্ষনের শিকার শিশু শিক্ষার্থীর পিতা বাদি হয়ে শিবগঞ্জ থানা মামলা দায়ের করেন। ধর্ষনের শিকার শিশু শিক্ষার্থী বামুগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। মামলা নং ১৮, তারি-১১-১১-২০২৪।
অভিযুক্ত সাবেক সেনা সদস্য একই গ্রামের মৃত আলহাজ¦ ভুলু আলীর ছেলে আলহাজ¦ রফিকুল ইসলাম(৫৫)।
এদিকে বুধবার সকালে অনুসন্ধানে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম একজন সাবেক সেনা সদস্য হলেও তিনি চরিত্রহীন ব্যক্তি। তিনি শুধু শিশু ধর্ষনের সাথে জড়িত না, তিনি তাঁর ছেলে বউ, বোনের মেয়েসহ আরো কয়েকজনের সাথে অপকর্ম করেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
প্রত্যক্ষদর্শী মোসাঃ সুরেফা বেগম জানান, রফিক আর্মি আর শিশুটি এক সাথে মোবাইল দেখছিল। শিশুটির মা বাড়ি বাইরে গেলে তিনি জিজ্ঞেস করে তুমি কোথায় যাচ্ছো। তাঁর প্রতি উত্তরে মহিপুর যাচ্ছি বলে জানান শিশুটির মা। সেই সুযোগে বাড়ি ফাঁকা পেয়ে ঘরের ভিতরে নিয়ে গিয়ে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং মুখে গামছা ঢুকিয়ে ধর্ষণ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। তার পরপরই শিশুটি বেরিয়ে আসে। পরে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সব কিছু খুলে বলে দেয়।
তিনি আরো বলেন, শুধু আজকের ঘটনাটি না, এর আগে তাঁর নিজ ছেলের বউ, নিজ বোনের মেয়ের সাথেও এই কাজ করেছেন। এধরনের ব্যক্তির উপযুক্ত শাস্তি হওয়ায় উচিৎ। এছাড়া স্থানীয় আরো কয়েকজন একই অভিযোগ করেন।
এদিকে, শিশুটি নানী বলেন, রফিকুল আর্মি জোরপূর্বক বাড়িতে ঢুকে একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে এমন অপকর্মেও জন্য তাঁর ফাঁসি চাই। একজন বয়স্ক মানুষ হয়ে শিশু সাথে কুকুর ন্যায় আচরণ করেছে। যে বাচ্চাটি তার জীবনের কিছুই বুঝে উঠেনি তার সাথে জঘৃন্ন আচরণ কেনা করলো?
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, রফিক আর্মির ছেলে সানিও আর্মি। সে আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পলাতক থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, তাঁর স্ত্রীর বক্তব্য স্বামী রফিকুল ইসলামকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি এধরনের কাজ করতে পারেন না। তাঁরা যা কিছু বলছেন তা মিথ্যা। আ জবা আগের কোনো ঘটনা ঘটনায়নি তিনি।
অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম সানি বলেন, আমার পিতাকে ফাঁসানো চেষ্টা করছে। এছাড়া আমি কাউকে কোনো ভাবেই হুমকি দেয়নি।
এদিকে, ধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, শিশু নির্যাতনের ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে, আমাকে কোন পক্ষই এখনো জানাননি। এছাড়া সাবেক সেনা সদস্য রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে বলে লোক মারফৎ জেনেছি।
মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা এস.আই হাসান জানান, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত রফিকুল পলাতক রয়েছে। নির্যাতিত শিশুটির মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ঘটনার দিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম কিবরিয়া জানান, ধাইনগর ইউনিয়নের পীরগাছি গ্রামে একটি শিশুর সাথে পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে আসামী গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীকে গ্রেপ্তার করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার পরপরই নির্যাতনের শিকার শিশুর মেডিকেল পরীক্ষার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। ডাক্তাররা শিশুটির নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তবে, পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পাইনি। প্রতিবেদনটি হাতে পেলে আদালতে দাখিল করা হবে।