এনামুল হক :- স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের ভুলতা-গাউছিয়া এলাকার ফুটপাত ফের হকারদের দখলে চলে গেছে। উচ্ছেদ করার পাঁচ মাস পর এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কের দুই পাশ দখল করে কাপড়, কসমেটিকস, ফলমূল, মাছ, শাক-সবজি, চায়ের দোকান, চটপটি ও ফুচকার দোকানপাট বসিয়ে হকাররা সহস্রাধিক দোকনে পণ্য কেনা-বেচা করছে। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আরো জমজমাট হয়ে ওঠে কেনা-বেচা। স্থানে স্থানে রেন্ট-এ-কারের প্রাইভেটকারের স্ট্যান্ড থাকায় যানযট স্থায়ীভাবে রূপ নিচ্ছে। তাতে মহাসড়কের ভুলতা-গাউছিয়া এলাকায় যানযট লেগেই থাকে। এমন দৃশ্য প্রতিদিনের। গতকাল ১৫জুলাই সোমবার ফুটপাত ও মহাসড়ক দখল হওয়ায় দুইপাশেই যাত্রী ও মালবাহী গাড়ির দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। তাতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রী ও পথচারীদের।
গত ৩ফেব্রæয়ারি মহাসড়কের যানজট নিরসন করতে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেলের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে মহাসড়ক দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সহ¯্রাধিক দোকান পাট উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু স্থানীয় পুলিশ ও প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করে হকাররা আবারো মহাসড়ক দখলে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগের মতোই ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির নিচে ফুটপাত ও মহাসড়ক দখল করে ইজিবাইকের স্ট্যান্ড। একটু সামনেই গাউছিয়া মার্কেট-১ এর পাশে ফুটপাত ও মহাসড়ক দখল করে কাপড়, কসমেটিকস, জুতা, আখের রসের দোকান, ডিমের দোকানপাট বসিয়ে হকাররা ব্যবসা করেছে। পাশেই গাউছিয়া মার্কেট-২ এর সামনে একই চিত্র দেখা গেছে।
গাউছিয়া কাঁচাবাজারের সামনে আরো ভিড়। সেখানেও পূর্বের মতোই ফুটপাতে টং বসিয়ে অর্ধশতাধিক ফলের দোকানে কেনা বেচা চলছে। সেই সঙ্গে গাউছিয়া কাঁচা বাজারের সামনে গড়ে তুলেছে গাউছিয়া-মাধবদীর লেগুনা ও মিনিবাসের স্ট্যান্ড। গোলাকান্দাইল গোলচত্ত¡রে ও ফ্লাইওভারের নিচে মহাসড়ক দখল করে গোলাকান্দাইল-কুড়িল বিশ্বরোড প্রাইভেটকার ও সিএনজির অবৈধ স্ট্যান্ড। গোলাকান্দাইল গোলচত্ত¡রের পূর্বপাশে মহাসড়কের উপর বাস স্ট্যান্ডের স্থান দখল করে গড়ে তুলেছে পিকআপ স্ট্যান্ড। সাওঘাট স্ট্যান্ডে মহাসড়ক দখল করে ইজিবাইক ও সিএনজি স্ট্যান্ড করা হয়েছে। সাওঘাট স্ট্যান্ড থেকে গোলাকান্দাইল চৌরাস্তা পর্যন্ত ভ্যান গাড়ি দিয়ে মহাসড়ক দখল করেছে চালকরা। আল-রাফি হসপিটাল, ইদ্রিস আলী প্লাজা, ভাই ভাই শপিং কমপ্লেক্সের সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাস স্ট্যান্ডের স্থান দখল করে প্রাইভেটকার, সিএনজি ও ইজিবাইকের অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে তুলেছে তারা। পূর্বাচল গার্ডেন, মহোত্তম শপিং কমপ্লেক্স, নুরম্যানশন, আব্দুল হক সুপার মার্কেট ও তাঁতবাজারের সামনে মহাসড়ক দখল করে ৫শতাধিক অবৈধ দোকানপাট বসিয়ে কেন-বেচা চলছে প্রতিনিয়ত। এসকল দোকানপাট থেকে পুলিশ ও রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রতিদিন ২শ’ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে।
এ ব্যাপারে ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলী আশরাফ মোল্লা বলেন, পুলিশ মহাসড়ক দখলমুক্ত রাখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। প্রতিনিয়তই অভিযান চলছে। অবৈধ দোকানপাট থেকে পুলিশ কোন রকম চাঁদা আদায় করে না।
রূপগঞ্জ থানা ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে রূপগঞ্জ থানা পুলিশও মহাসড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। মহাসড়ক দখল মুক্ত রাখতে বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা গাউছিয়ার যানজট নিরসনে ফুটপাত দখলকারীদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। রূপগঞ্জ উপজেলা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাসড়কের অবৈধ দখলদারদের শিগগিরই উচ্ছেদ করা হবে।
সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেন, মহাসড়ক দখলদাররা যে দলেরই হোক কিংবা যত শক্তিশালীই হোক ছাড় দেওয়া হবে না। যাত্রীদের চলাচলের জন্য মহাসড়ক দখলমুক্ত করা হবে।