Monday, December 23, 2024
বাড়িUncategorizedমধু সংগ্রহে ব্যস্ত শতাধিক মৌ চাষীর দল

মধু সংগ্রহে ব্যস্ত শতাধিক মৌ চাষীর দল

শিবগঞ্জে জেলা ও জেলার বাহির থেকে আগত শতাধিক মৌচাষির দল মাঠে মধু চাষে ব্যস্ত। তবে উপজেলার চেয়ে বাহিরের মৌচাষের সংখ্যাই বেশি। সংশ্লিষ্ট দফতর বলছেন, শিবগঞ্জ মৌচাষিদের সংখ্যা খুব কম হওয়ায় তারা বাহির থেকে আসছে। তবে মৌচাষিদের সংখ্যা বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। মৌ বোর্ড গঠনের জন্য সুপারিশ করা হবে।

উপজেলার বিভিন্ন মাঠে প্রায় ২৫-৩০ মৌচাষ খামারে ঘুরে মৌচাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মধু চাষ একটি লাভজনক পেশা। তাছাড়া মধু খাওয়া সব মানুষের উচিত, কারণ মধুতে প্রায় একশো রোগের ঔষধ হিসাবে কাজ করে।

উপজেলার দূর্লভপুর ইউনিয়নের নামো জগনাথপুর মাঠে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থেকে আগত নাটোর মৌ চাষ সমবায় সমিতির সভাপতি মাসুদ রানা জানান, এখানে প্রায় ১৪০টি বাক্স নিয়ে ২০দিন আগে এখানে আমরা ৫/৬জন কাজ শুর করেছি। নয় মণ মধু সংগ্রহ করেছি। আরও প্রায় ১৮ মণ মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা আছে। সংগ্রহিত মধু ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। মধুকে আমরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রী করি। তিনি নাটোরে থেকে পাঁচটি দল মধু চাষ করছি। প্রতিটি দলে গড়ে ৪ জন করে লোক আছে।

একই দলে থাকা বাংলাদেশ হ্যানি রিসার্চ ইন্সিটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আরিফ উদ্দিন জানান, সারা বাংলাদেশে বিসিক থেকে সামান্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। কৃষি বিভাগ থেকে নামমাত্র তেল বীজ প্রকল্পের আওতায় থেকে সামান্য কিছু সহযোগিতা করা হয়। দেশে মধুর চাহিদা হলো ২৫ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদন হয় মাত্র ১৬ হাজার মেট্রিক টন। অথচ বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫০/৬০হাজার মেট্রিক টন মধু উৎপাদনের সম্ভবনা রয়েছে। কারণ এ দেশে সরিষার ফুল, আমের মুকুল,লিচুর মুকুল, কালজিরার ফুলসহ বিভিন্ন ধরণের ফল থেকে প্রচুর মধু উৎপাদন হয়।

তিনি বলেন, দুই জাতির মৌমাছি আছে। ইউরোপিয়ান থেকে আমদানীকৃত মৌমাছির জাত হলো এপিস মেলিফেরা, এরা অত্যন্ত শান্ত, আক্রমণ করে না। মধু উৎপাদন ক্ষমতা বেশি। আর দেশী জাত হলো এপিস ডরসেটা। এ জাতের মৌমাছির মধু উৎপাদনের ক্ষমতা কম। তবে এরা আক্রমণাত্মক। যদি বাংলাদেশ সরকার মৌ বোর্ড গঠনের মাধ্যমে একটি নীতিমালা তৈরি করে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ক,ে ফলে মধু উৎপাদন বেশী হবে। কর্মসংস্থানও বাড়বে। সরকারে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। এমনি বিদেশে মধু রফতানী করেও যাবে।

বিনোদপুর ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর সাতভাইয়া মাঠে নড়াইল জেলা থেকে আগত সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট মৌচাষি নুরুল ইসলাম জানান, আমরা তিনজন একসঙ্গে আছি। কয়েকদিন আগে কাজ শুরু করেছি। আশা করি ভাল ফলাফল পাবো।

তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে একজনের কাছে মধু চাষেয় গল্প শুনে আগ্রহ হলে ১০ লাখের মৌমাছির প্রতিটি বাক্স ৯০০ টাকা দরে ১০টি চাক অন্য মধু চাষির কাছ ক্রয় করে মধু চাষ শুরু করি। প্রথমে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে মধু চাষ শুরু করেছি। এখানে আমাদের ৮৫টি বাক্স আছে। এখানে বাক্স প্রতি ৪০ কেজি করে মধু সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এখন আর তেমন কোন খরচ নেই। উপকরণ, বহন ও যাতায়াত খরচ বাবদ ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিবছর জনপ্রতি আয় হয় খরচ বাদে আড়াই লাখ টাকা। নড়াইল থেকে প্রায় ২০টি দল এসেছি। প্রতিটি দলেই তিন থেকে পাঁচজন লোক আছে।

মনাকষা ইউনিয়নের সিংনগর মাঠে নাটোর থেকে আগত মধুচাষি সেলিম জানান, এখানে আমরা তিনজনে ১৫দিন থেকে মধূ সংগ্রহ করছি। গত ১৫ দিনে আট মণ মধু সংগ্রহ করেছি। লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১০০ মণ মধু সংগ্রহের।

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিষার কৃষিবিদ নয়ন মিয়া বলেন, এবছরে শিবগঞ্জে মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫০০ কেজি। এ পর্যন্ত উতপাদন হয়েছে ৪৯০০ কেজি। শিবগঞ্জে ৬টি দলের মাধ্যমে প্রায় ১০০ জন মধু চাষ করছে। এছাড়াও নাটোর নেত্রকোনা, নড়াইল, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে অনেক দল মধু চাষ করতে আসে। মধুচাষে সরিয়ার উৎপাদন কমে না ববং পরাগায়ণের ফলে ফলন বৃদ্ধি পায়। সরিয়া ক্ষেতে বিষ প্রয়োগ না করার জন্য সচেতন করা হচ্ছে। অনেকটা কমেছে।

সম্পরকিত খবর

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -
Google search engine

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সর্বশেষ মতামত